শুধু আল্লাহ আছেন বললেই মুসলিম হওয়া যায় না, কারণ যদি আলাহআছেন এ কথা বললেই মুসলিম হওয়া যায় তাহলে এ কথা মক্কার কাফেররাও স্বীকার করতো। যেমন ইরশাদ হয়েছে পবিত্র কুরআনে,অর্থ: “যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তবে অবশ্যই তারা বলবে, আল্লাহ, অত:পর তারা কোথায় ফিরে যাচেছ ? (যুখরূফ, ৪৩ঃ ৮৭)
অর্থ: “আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন কে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল
সৃষ্টি করেছে? তারা অবশ্যই বলবে, এগুলো সৃষ্টি করেছেন পরাক্রমশালী
সর্বজ্ঞ আল্লাহ। (যুখরূফ, ৪৩ঃ ৯)
অর্থ: “যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, কে আকাশ থেকে বারি বর্ষণ
করে, অত:পর তা দ্বারা মৃত্তিকাকে উহার মৃত হওয়ার পর সঞ্জীবিত করে?
তবে তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ। বলুন, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহই।
কিন্তূ তাদের অধিকাংশই তা বোঝে না। (আনকাবুত, ২৯ঃ ৬৩)
অর্থ: “যদি আপনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, কে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল
সৃষ্টি করেছে, চন্দ্র ও সূর্যকে কর্মে নিয়োজিত করেছে? তবে তারা অবশ্যই
বলবে আল্লাহ। তাহলে তারা কোথায় ঘুরে বেড়াচেছ?” (আনকাবুত : ৬১)
অর্থ: “তুমি জিজ্ঞেস কর, কে রুযী দান করে তোমাদেরকে আসমান থেকে
ও যমীন থেকে, কিংবা কে তোমাদের কান ও চোখের মালিক? তাছাড়া কে
জীবিতকে মৃতের ভেতর থেকে বের করেন এবং কেইবা মৃতকে জীবিতের
মধ্য থেকে বের করেন? কে করেন কর্ম সম্পাদনের ব্যবস্থাপনা? তখন
তারা বলে উঠবে, আলাহ্! তখন তুমি বলো তারপরেও ভয় করছ না?
(ইউনুস, ১০ঃ ৩১)
অর্থ: “বলুন পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যারা আছে, তারা কার? যদি তোমরা
জান। এখন তারা বলবে: সবই আল্লাহর। বলুন, তবুও কি তোমরা চিন্তা
কর না? (মুমিনুন, ২৩ঃ ৮৪-৮৫)
অর্থ: “বলুনঃ তোমাদের জানা থাকলে বল, কার হাতে সব বস্তুরকতর্ৃত্ব,
যিনি রক্ষা করেন এবং যার কবল থেকে কেউ রক্ষা করতে পারে না ?
এখন তারা বলবেঃ আল্লাহরই। (মুমিনুন, ২৩ঃ ৮৮)
আল্লাহর নবীর বয়স যখন ৩৫ বৎসর তখন ক্বাবা পুননির্মাণের প্রয়োজন
হয়, তখন মক্কার কাফেররা পরামর্শে বসল যে, তখন তারা সিদ্ধান্ত নিলো
যে, ক্বাবা নিমার্ণ করতে গিয়ে তারা কোন হারাম পয়সা লাগাবে না। সবার
হালাল পয়সা জমা করে দেখা গেল, এর দ্বারা পূর্ণ ক্বাবা নিমার্ণ করা সম্ভব
নয়, যদি পূর্ণ ক্বাবা নিমার্ণ করতে চাই তাহলে হারাম পয়সা ব্যবহার
করতে হবে। কিন্তু তারা তা না করে হালাল পয়সা দিয়ে যতটুকু সম্ভব
হয়েছে ততটুকুই করেছে আর বাকীটা বাদ দিয়ে দিয়েছে, হাতিমে ক্বাবা
যার সাক্ষ্য বহন করে। এর দ্বারা বুঝা যায় তারা আলাহকে কত ভয় করে।
আবরাহা বাদশা যখন ক্বাবা ধ্বংস করতে আসলো, এবং আবদুল মুত্তালিব
এর কিছু দুম্বা, ভেড়া-বকরি নিয়ে গিয়েছিল। তিনি যখন আবরাহার কাছে
গিয়ে ক্বাবা সম্পর্কে কিছু না বলে ঐ পশুগুলো ফেরত আনার ব্যাপারে কথা
বললেন।
ইহুদী নাসারারাও আল্লাহকে বিশ্বাস করে:
অর্থ: “ইহুদী ও খ্রীষ্টানরা বলে, আমরা আল্লাহর সন্তান ও তার
প্রিয়জন।” (মায়েদাঃ ১৮)
ফেরাউনও আল্লাহকে বিশ্বাস করতো:
অর্থ: “ফেরাউনের সম্প্রদায়ের র্সদাররা বলল, তুমি কি এমনি ছেড়ে দেবে
মূসা ও তার সম্প্রদায়কে। দেশময় হৈ-চৈ করার জন্য এবং তোমাকে ও
তোমার দেব-দেবীকে বাতিল করে দেবার জন্য। (আরাফ, ৭ঃ ১২৭)
এই আয়াতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে, ফেরাউন ও বিশ্বাস করতো যে, আল্লাহ
আছে তবে তা অনেক।
ফেরাউন নিজেকে আলাহ বলে দাবী করেছে:
অর্থ: “ফেরাউন বলল, হে পরিষদবর্গ, আমি জানি না যে, আমি ব্যতীত
তোমাদের কোন উপাস্য আছে। (কাসাসঃ ৩৮)
অর্থ: “ফেরাউন বলল, তুমি যদি আমার পরিবর্তে অন্যকে উপাস্যরূপে
গ্রহণ কর তবে আমি অবশ্যই তোমাকে কারাগারে নিক্ষেপ করব। (শুআরাঃ ২৯)
আবার অন্য আয়াতে সে নিজেকে রব বলে দাবী করছে, ইরশাদ হচ্ছে:
অর্থ: “সে সকলকে সমবেত করল এবং সজোরে আহবান করল। এবং
বলল: আমিই তোমাদের সেরা পালনকর্তা। (নাযিআত, ৭৯ঃ ২৩-২৪)
শয়তানও আল্লাহকে বিশ্বাস করে:
অর্থ: “আর যখন সুদৃশ্য করে দিল শয়তান তাদের দৃষ্টিতে তাদের
কার্যকলাপকে এবং বলল যে, আজকের দিনে কোন মানুষই তোমাদের
উপর বিজয়ী হতে পারবে না আর আমি হলাম তোমাদের সমর্থক,
অতঃপর যখন সামনাসামনি হল উভয় বাহিনী তখন সে অতি দ্র“ত পায়ে
পেছনে দিকে পালিয়ে গেল এবং বলল, আমি তোমাদের সাথে না - আমি
দেখছি, যা তোমরা দেখছ না; আমি ভয় করি আলাহকে। আর আল্লাহর
আযাব অত্যন্তÍ কঠিন। (আনফাল, ৮ঃ ৪৮)
অর্থ: “তারা শয়তানের মত, যে মানুষকে কাফের হতে বলে। অত:পর
যখন সে কাফের হয়, তখন শয়তান বলে: তোমার সাথে আমার কোন
সম্পর্ক নেই। আমি বিশ্বপালনকর্তা আলাহ্ তা'আলাকে ভয় করি। (হাশর,
৫৯ঃ ১৬)
তাহলে পার্থক্য কোথায়?
পূর্বের আলোচনায় পরিষ্কার হলো যে, রাসূল সালালাহু সালামের যুগের
কাফির, মুশরিক, ইহুদী, নাসারা এবং ফেরাউন, এমনকি শয়তানও
আল্লাহকে বিশ্বাস করে। তাহলে তাদের ও আমাদের মাঝে পার্থক্য
কোথায়? কেন তারা কাফির আর আমরা মুসলিম? কেন তার আলাহর
দুশমন এবং আমরা আল্লাহর বন্ধু? কেন তারা জাহান্নামী এবং মুসলিমরা
জান্নাতী?
ধন্যবাদ সবাইকে।
Tags:
(মানব জীবনে তাওহীদের গুরুত্ব,
তাওহীদ কয় প্রকার ও কি কি,
তাওহীদে উলুহিয়্যাহ কাকে বলে,
তাওহীদ পিডি এফ,
তাওহীদ সম্পর্কে হাদিস,
তাওহীদে উলুহিয়াত,
শির্ক কাকে বলে,
তাওহীদ ও শিরক,
রিসালাত কাকে বলে,
আকিদা কাকে বলে,
শিরকের পরিচয়,
তাওহীদের রুকন কয়টি,)