লা ইলাহা'র ঝগড়া | The quarrel of La Ilaha

লা ইলাহা'র ঝগড়া | The quarrel of La Ilaha

তবে ওহে মুশরেক! তোদের সাথে আমাদের বিরোধ কোথায়?
তখন তারা বলবেঃ আমরা আল­াহতেও বিশ্বাস করি এবং আমাদের দেব-
দেবীতেও বিশ্বাস করি। শুধু আল­াহ নয়, ও আছে আবার 
ও আছে। সুতরাং এখানে পার্থক্য হলো ‘ই’ এবং ‘ও’ র মধ্যে।
‘লা ইলাহা’র ঝগড়া’

রাসূল (সাঃ) বলতেন ঃ আল­াহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই।
মুশরিকরা বলতো ঃ আল­াহ ছাড়া আরও মাবুদ আছে।
আল­াহর রাসূল মুশরিকদের দেব-দেবীদেরকে অস্বীকার করতেন! আর
মুশরিকরা বিরোধীতা করতো!
বুঝা গেল, আগে না, পরে হাঁ। আল­াহ তা‘আলা ইরশাদ করেনঃ
অর্থ: “তাদের যখন বলা হত, আল­াহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, তখন
তারা ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করত।” (ছফফাত, ৩৭ঃ )
এর মানে হচ্ছে ঃ

আমাদের মুকাবেলা করতে পারে এমন কে আছে? আমাদের শক্তি আছে,
জনবল আছে, আমরা গদ্দীনাশীন, আমাদের মাজার আছে, পীর আছে,
পার্টি আছে, মন্ত্রী-এম.পি আছে।
র কথা শুনে ওদের ব্লাড প্রেশার শুর“ হয়ে যেত, চক্ষু লাল
হয়ে যেত, রাগে-ক্ষোভে দাঁত কড়-মড় করতো, চিৎকার করতো ঃ
অর্থ: “এবং তারা বলতো, আমরা কি এক উন্মাদ কবির কথায় আমাদের
ইলাহদেরকে পরিত্যাগ করব।” (ছফফাত, ৩৭ঃ ৩৬)
বুঝা গেল, তারা র অর্থ ঠিকমতই বুঝেছিল। নতুবা
(আমাদের ইলাহদেরকে পরিত্যাগ করব?) এ কথা কেন
বললো? হাঁ, র অর্থ তাই। এজন্য মুশরিকরা বুঝে-শুনেই
প্রতিবাদ করেছে।
এক শ্বাসে দুই গালি
রাসূল সাল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামের আবেগময় তাওহীদের দাওয়াত
এবং ঈমানদীপ্ত আহ্বানে তাদের উচিত ছিল (লাব্বাইক) বলে সাড়া
দেওয়া এবং রাসূলের আহ্বানকে অন্তরের গভীরে স্থান দেওয়া। কিন্তু
হতভাগা মুশরিকরা রাসূল সাল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামকে এক শ্বাসে
দুই গালি দিল ঃ
(কবি) তাদের ভাষায় ‘বেহুদা প্রলাপকারী’।
(উন্মাদ) বিবেক-বুদ্ধি ও কান্ড জ্ঞানহীন।
অথচ আল­াহ তাআলা স্বীয় রাসূলের স্বপক্ষে ঘোষণা করছেনঃ
‘আমি রসূলকে কবিতা শিক্ষা দেইনি এবং তা তার জন্যে তা শোভনীয়ও
নয়। (ইয়াসীন, ৩৬ঃ ৬৯)
অর্থ: “নূন। শপথ কলমের এবং সেই বিষয়ের যা তারা লিপিবদ্ধ করে।
আপনার পালনকর্তার অনুগ্রহে আপনি উম্মাদ নন। (কলম, ৬৮ঃ ১-২)
বুঝা গেল, তাওহীদের বক্তব্য শুনে গালি দেওয়া মুশরিকদের পুরাতন
অভ্যাস। বর্তমানেও তার ব্যতিক্রম নয়।
টদ্বিতীয় দলীলঃট -র জবাবে মুশরিকরা যে সমস্ত কথা-বাতার্
বলতো, পবিত্র কুরআন সেগুলো রেকর্ড করে রেখেছে, বাটন চাপুন আর
শুনুন কুরআন কি বলছেঃ
.
.
“আর কাফেরগণ বললোঃ এ-তো এক মিথ্যাচারী, যাদুকর। সে কি বহু
ইলাহকে এক ইলাহ তে কেন্দ্রীভূত করে ফেললো। নিশ্চয় এটা এক
বিস্ময়কর ব্যাপার। তাদের কতিপয় বিশিষ্ট ব্যক্তি একথা বলে প্রস্থান করে

যে, তোমরা চলে যাও এবং তোমাদের ইলাহদের ইবাদতে দৃঢ় থাক।
নিশ্চয়ই এ বক্তব্য কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে প্রণোদিত। (ছোয়াদ, ৩৮ঃ ৫)
এ আয়াত থেকে বুঝা গেল যে, মক্কার কাফির-মুশরিকদের ‘এক ইলাহ’
সম্পর্কে কোন ধারণা-ই ছিল না। বরং রীতিমত তারা এটাকে বিস্ময়কর
মনে করতো।
এ কারণেই রাসূল সাল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­ামকে তাওহীদের দাওয়াত
দেওয়ার কারণে জুলুম-অত্যাচার, নিযার্তন-নিপীড়ন, ও চরম গালি-
গালাজের লক্ষবস্তুতে পরিণত করলো। কখনও ‘কবি’, ‘উন্মাদ’ আবার
কখনও ‘যাদুকর’, ‘মিথ্যাবাদী’ আবার কখনও ‘স্বার্থবাদী’ ও ‘ক্ষমতা দখল
করার পায়তারাকারী’ বলে অপবাদ দিতে লাগলো।
ওদের এত বিরোধীতার কারণ ছিল একটাই, কেন মুহাম্মাদ সাল­াল­াহু
আলাইহি ওয়া সাল­াম তাদের বহু ইলাহ ও বহু রবের বিরোধীতা করে এক
ইলাহের ইবাদতের দিকে আহ্বান করছে? তারা চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে
বললোঃ চলো, মুহাম্মাদ সাল­াল­াহু আলাইহি ওয়া সাল­াম যদি আমাদের
আলেহা’দের মূলোৎপাটন করতে চায় তাহলে আমরাও দীপ্তপায়ে আমাদের
আলেহা’দের সাহায্যে অবিচল থাকবো।
বুঝা গেল, তাদের দাবী ছিলঃ
ঙ্ তোমরা আমাদের আলিহা’দের বর্জন করো না।
ঙ্ তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করো না।
ঙ্ তাদের ক্ষমতাকে অস্বীকার করো না।
এর দ্বারা এ কথা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, যেমনিভাবে আল­াহ তাআলার
সমস্ত ছিফতকে স্বীকার করার নাম তাওহীদ। তেমনিভাবে
গাইর“ল­াহ-র ইবাদতের সমস্ত কিছুকে অস্বীকার করার নামও
তাওহীদ।
গালির সংখ্যায় আরও সংযোজনঃ
(কবি) তাদের ভাষায় ‘বেহুদা প্রলাপকারী’।
(উন্মাদ) বিবেক-বুদ্ধি ও কান্ড জ্ঞানহীন।
(যাদুকর)।
 (মিথ্যাবাদী)।
বুঝা গেল মুশরিকরা তাওহীদের বক্তব্য যতবেশী শুনবে, শিরকের আগুন
ততবেশী জ্বলবে। অতএব শিরকের গতি বুঝতে হলে তাওহীদের বাণী
বেশী শুনাতে হবে।
টকুরআনের তৃতীয় সাক্ষীঃ
আল­াহ তা‘আলা মুশরিকদের জ্বালাতন বৃদ্ধির করার জন্য আরেকটি নতুন
পদ্ধতি বাতলে দিয়েছেন। আর তা হলোঃ এর পরিবর্তে এর
গুলি ব্যবহার করো, দেখবে তাদের হৃদপিÊের স্পন্দন বহুগুণে বেড়ে
যাবে। ইরশাদ হচ্ছে ঃ
অর্থ: “যখন আপনি কোরআনে আপনার রবের একত্ব বর্ণনা করেন, তখন
অনীহাবশত: ওরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে চলে যায়।” (বনী ইসরাঈল : ৪৬)
তারা বলেঃ আমাদের লাত’ কোথায় গেল? উয্যা’ কোথায় গেল? মানাত’
কোথায় গেল? হোবাল’ কোথায় গেল? পীর’ কোথায় গেল? খাজা বাবা’
গাজা বাবা’ ল্যাংটা বাবা’ কোথায় গেল?
অর্থ: “সে কি সব ইলাহকে এক ইলাহ বানিয়ে ফেললো।” (ছোয়াদ : ৫)
তারা বলে ঃ আল­াহ ও আছেন, খাজা বাবা ও আছেন, আল­াহ ও আছেন,
গাজা বাবা ও আছেন, আল­াহ ও আছেন, কবর ওয়ালা ও আছেন, আল­াহ
ও আছেন, পীর সাহেব ও আছেন। রাসূল (সাঃ) বলেন ঃ আল­াহই
আছেন, খাজা বাবা নাই, আল­াহই আছেন, গাজা বাবা নাই, আল­াহই
আছেন, কবর ওয়ালা নাই, আল­াহই আছেন, পীর সাহেব নাই।

ও’ এবং ই’-র পার্থক্য টকুরআনের চতুর্থ সাক্ষী ঃ
অর্থ: “যখন আল­াহ্র এককত্ব আলোচনা করা হয়, তখন যারা পরকালে
বিশ্বাস করে না, তাদের অন্তর সংকুচিত হয়ে যায়, আর যখন আল­াহ্

ব্যতীত অন্য ইলাহ’দের আলোচনা করা হয়, তখন তারা আনন্দে উল­াসিত
হয়ে উঠে।” (যুমার, ৩৯ঃ ৪৫)
আল­াহ তা’আলা এখানে মক্কার কাফের-মুশরিকদের আজব চিত্র তুলে
ধরেছেন, যখন এক আল­াহ তথা তাওহীদের আলোচনা করা হয়, তখন
তাদের মনটা খারাপ হয়ে যায় রাগে-ক্ষোভে, অন্তরটা ফেটে যেতে চায়।
শরীরের পশমগুলো দাঁড়িয়ে যায়, চেহারাটা মলিন হয়ে যায়, আর যদি
আল­াহ সাথে তাদের পীর, বুজুর্গ তথা গাইর“ল­াহর আলোচনা করা হয়,
তখন তাদের মনটা আনন্দে উদ্ভাসিত হয়, খুশীতে বাগ বাগ হয়ে যায়,
চেহারা উজ্জ্বল হয়ে যায়।
তাওহীদের কথা বললে ঃ পাথর বৃষ্টি বর্ষণ হবে, গালি-গালাজের তুফান
বয়ে যাবে, ভৎসনা ও তিরষ্কারের বাজার গরম হয়ে যাবে, শোড়-গোল শুর“
হয়ে যাবে, আর যদি আল­াহর সাথে ঘোড়া শাহ্, গাধা শাহ, ইঁদুর শাহ,
বাঁদর শাহ, লেচু শাহ, গোলাপ শাহ ইত্যাদি যোগ করা হয়, তাহলে আনন্দ
ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত হবে, বাহ্ বাহ পাওয়া যাবে, হাদিয়া-
তুহফাতে পকেট ভরে যাবে, হালুয়া-মিষ্টি স্তুপ লেগে যাবে, খাদেম-
খুদ্দামের লাইন লেগে যাবে, আলীশান ইমারত নিমার্ণ করা যাবে।
অর্থ: “তোমাদের এ বিপদ এ কারণে যে, যখন এক আল­াহকে ডাকা হত,
তখন তোমরা কাফের হয়ে যেতে, যখন তার সাথে শরীককে ডাকা হত
তখন তোমরা বিশ্বাস স্থাপন করতে। এখন আদেশ তাই, যা আল­াহ্
করবেন, যিনি সর্বোচচ, মহান।” (আল-মুমিনুন, ৪০ঃ ১২)
এ আয়াতেও প্রমাণিত হল যে, কাফির-মুশরিকদের সঙ্গে মুসলিমদের মূল
পার্থক্য ‘তাওহীদ’।
ইসলাম বলে ঃ গাইর“ল­াহ’কে বর্জন করতে হবে, তারা বলে ঃ
গাইর“ল­াহ’কে বর্জন করা যাবে না। গাইর“ল­াহ’র নামে নজর-নাইয়াজ ও
মান্নত বন্ধ করা যাবে না। গাইর“ল­াহ’কে হাজত রাওয়াঁ, মুশকিল কুশাঁ,
কাশফ খোলা, হাজের-নাজের, আলিমুল-গায়েব ইত্যাদি আক্বিদার
বিরোধীতা করা যাবে না।
পূর্ববতর্ী উম্মতের মুশরিকরাও এ রোগে আক্রান্ত ছিল
কুরআন মাজীদ বলছে, আল­াহর সঙ্গে গাইর“ল­াহ’ (তথা পীর, বুযুর্গ, অলী-
আউলিয়াদের) কে যোগ করার এ রোগ শুধু মক্কার মুশরিক’দের মধ্যেই
সীমাবদ্ধ ছিল না বরং পূর্ববতর্ী উম্মতের মুশরিকরাও এ রোগে আক্রান্ত
ছিল। সুতরাং এ কথা বলা যায় যে, রোগ একটাই কিন্তু ডাক্তার পরিবর্তন
হচ্ছিল।

টকুরআনের ষষ্ঠ সাক্ষীঃ
অর্থ: “তোমাদের কাছে কি তোমাদের পূর্ববর্তী কওমে-নুহ, আদ ও
সামুদের এবং তাদের পরবতর্ীদের খবর পৌছেনি? তাদের বিষয়ে আল­াহ্
ছাড়া আর কেউ জানে না। তাদের কাছে তাদের পয়গম্বরগণ প্রমানাদি
নিয়ে আগমন করেন। (ইবরাহীম, ১৪ঃ ৯)
যখনই নবী-রাসূলগণ মুশরিক সম্প্রদায়কে তাওহীদের কথা বলেছেন এবং
তাদের কাছে দলীল-প্রমানের ভিত্তিতে ‘লা ইলাহা ইল­াহ’র মূল দাবী পেশ
করেছেন, তখনই তারা (কাফেররা) জবাবে বলেছেঃ
অর্থ: “তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ! তোমরা আমাদেরকে ঐ মাবুদ
থেকে বিরত রাখতে চাও, যার ইবাদত আমাদের পিতৃপুরুষগণ করত।
অতএব তোমরা কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ আনয়ন কর।” (ইবরাহীম : ১০)
এই আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, পূর্ববতর্ী উম্মতের মুশরিকগণ ও নবী-
রাসুলদের দাওয়াতকে অস্বীকার করেছিল এ কারণে যে তারা বুঝতে
পেরেছিল আমাদেরকে আল­াহ ছাড়া অন্য মাদুদদের ইবাদত করা থেকে
বাধা প্রদান করা হচ্ছে।
কুরআনুল-কারীম সমস্ত মুশরিক সম্প্রদায়ের নাম নিয়ে নিয়ে তাদের
রোগের কথা উলে­খ করেছেনঃ আপনিও শুনুন -
টকওমে নূহ ঃ

অর্থ: “তারা বলছে: তোমরা তোমাদের ইলাহ’দের ত্যাগ করো না এবং
ত্যাগ করো না ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক ও নসরকে।” (নূহ, ৭১ঃ
২৩)
হযরত নূহ (আঃ) তার জাতিকে পূর্বের আয়াতে শুধু এক ইলাহের
ইবাদতের দিকে আহ্বান করেছে। তিনি কোন পীর-বুযুর্গের নাম উলে­খ
করেন নাই। অথচ তার জাতি প্রতিউত্তরে পাঁচজন আল­াহ ওয়ালা’দের নাম
উলে­খ করলো। বর্তমানে ও তাওহীদের দাওয়াত দিলে বিভিন্ন পীর-
বুজুর্গদের কথা উলে­খ করা হয়।
টকওমে আ’দ ঃ
অর্থ: “তারা বলল: তুমি কি আমাদের কাছে এজন্যে এসেছ যে আমরা
এক আল­াহ্র এবাদত করি এবং আমাদের বাপ-দাদা যাদের ইবাদত
করত, তাদেরকে ছেড়ে দেই?” (আরাফ, ৭ঃ ৭০)
অথার্ৎ তারা আল­াহর ইবাদত করতে আপত্তি করে নাই, শুধু তাওহীদ তথা
এক আল­াহর ইবাদত করতেই তাদের আপত্তি ছিল।
টকওমে হুদ ঃ
হুদ (আঃ) এর জাতি অহংকার এবং দাম্ভিকতা প্রকাশ করে হুদ (আঃ) কে
বললো:
‘তারা বলল-হে হুদ, তুমি আমাদের কাছে কোন প্রমাণ নিয়ে আস নাই,
আমরা তোমার কথায় আামাদের দেব-দেবীদের বর্জন করতে পারি না আর
আমরা তোমার প্রতি ঈমান আনয়নকারীও নই। (হুদ, ১১ঃ ৫৩)
এই আয়াতেও প্রমাণিত হলো ঃ হুদ (আঃ) গাইর“ল­াহর ইবাদতের অনুমতি
দিতে পারেননি, আর তাঁর জাতি গাইর“ল­াহর ইবাদত ছাড়তে পারে নি।
টকওমে সামুদ ঃ
‘তারা বলল-হে সালেহ, ইতিপূর্বে তোমার কাছে আমাদের বড় আশা ছিল।
আমাদের বাপ-দাদা যার ইবাদত করত তুমি কি আমাদেরকে তার ইবাদত
করতে নিষেধ কর? কিন্তূ যার প্রতি তুমি আমাদের আহবান জানাচছ
আমাদের তাতে এমন সন্দেহ রয়েছে যে, মন মোটেই সায় দিচেছ না।
(হুদ, ১১ঃ ৬২)

টআহলে মাদয়ান ঃ
হযরত শুআইব (আঃ) তার জাতিকে তাওহীদের দাওয়াত দেওয়ার পরে
তার জাতি তাকে উত্তর দিলো ঃ
অর্থ: “তারা বললঃ হে শুআইব (আ:) তোমার সালাত কি তোমাকে ইহাই
শিক্ষা দেয় যে, আমরা ঐসব ইলাহ’দেরকে পরিত্যাগ করব আমাদের
বাপ-দাদারা যাদের ইবাদত করত?” (হুদ, ১১ঃ ৮৭)
উলে­খিত আয়াতগুলো দ্বারা বুঝা যায় যে, সর্বকালে মুশরিকরা আল­াহ
তাআলার একত্ববাদকে অস্বীকার করতো, এবং তার কঠোর বিরোধী ছিল।
তাওহীদের শর্তাবলী বনাম এর শতার্বলী ঃ
শর্ত এমন একটি বিষয়, যার অনুপস্থিতিতে অন্যের অনুপস্থিতি অপরিহার্য
এবং যার অস্তিত্বে অন্যের অস্তিত্ব অপরিহার্য নয়। আর এটা হয়ে থাকে
জিনিসের বাইরে এবং তা শুর“ করার পূর্বে। তাওহীদের অনেকগুলো শর্ত
আছে। এর গুর“ত্ব অপরিসীম। এ সম্পর্কে জ্ঞানার্জন এবং এর শর্তগুলো
পূরণ করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ওয়াজিব। এটা এজন্য যে, কারো
মাঝে তাওহীদের কোনো শর্ত না পাওয়া গেলে তার মধ্যে ঈমান ও
ইসলাম মূলই পাওয়া গেলো না বলে বিবেচিত হবে। যেমন নামাজ সহীহ
হওয়ার শতার্বলীর মধ্যে যদি কোনো একটি শর্ত -যেমন কেবলামুখী হওয়া
অথবা ছতর ঢাকা- না পাওয়া যায় তাহলে নামাজ বাতিল বলে গণ্য হবে।

ধন্যবাদ। 
Previous
Next Post »