জাদুটোনা ও বদনজর থেকে বাঁচার জন্য ঝাড়-ফুক করার দোয়া


জাদুটোনা ও বদনজর থেকে বাঁচার জন্য ঝাড়-ফুক করার দোয়া

বদনযর বা জাদুটোনা থেকে বাঁচার জন্য ঝাড়-ফুক করার দোয়া জিবরাঈল (আ.) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিচের দোয়াটি পড়ে ফু দিয়েছিলেন

بسم الله أرقيك والله يشفيك من كل داء يؤذيك ومن شر النفاثات في العقد ومن 
شر حاسد إذا حسد

প্রতিটি কষ্টদায়ক রােগ হতে, প্রতিটি প্রাণের অথবা হিংসুটে চোখের অনিষ্ট হতে আমি আল্লাহর নামে আপনাকে ফুঁ দিচ্ছি। আল্লাহ আপনাকে আরােগ্য দান করুন। আমি আল্লাহর নামে আপনাকে ঝাড়ছি। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন। (মুসনাদে আহমাদ ৯৭৫৭, ১১৮১০, ইবনে মাজাহ ৩৫২৭) ঝাড়-ফুঁকের আরেকটি দু'আ- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাসান ও হুসাইন (রা.)-কে এই দু’আ পড়ে ঝাড়-ফুঁক করতেন

أعيذكما بكلمات الله الثانية من كل شيطان وهامة ومن كل عين لامة

আমি তােমাদের দুজনকে আল্লাহর পরিপূর্ণ কালামের মাধ্যমে সকল শয়তান, বিষধর জন্তু ও ক্ষতিকর চক্ষু থেকে আল্লাহর আশ্রয়ে (তিরমিযী ২০৬০, আউ দাউদ ৪৭৩৯, মুসনাদে আহমাদ ২১১২, মেশকাত ১৫৩৫) ঝাড়-ফুঁকের আরাে একটি দু'আ দিলাম ।

اللهم رب الناس مذهب الباس اشف أنت الشافي لا شافي إلا أنت شفاء لا يغادر

হে আল্লাহ মানুষের প্রভু, রােগ ব্যাধি দূর করে দিন। আরােগ্য দান করুন। আপনিই আরােগ্য দানকারী। আপনার আরােগ্য ছাড়া আর কোনাে আরােগ্য নেই। এমন আরােগ্য করুন যাতে কোনো রোগ না থাকে । (বুখারী ৫৭৪২, আবু দাউদ ৩৮৯২, মুসনাদে আহমাদ ১২৫৩২) যিকির-আযকার করার সময় : সকালের যিকির সমূহ ফজরের নামাজের পর পাঠ করবে । কিন্তু সন্ধ্যার যিকির সমূহ আছরের পর পাঠ করতে হবে। কেউ যদি উক্ত যিকির সমূহ যথাসময়ে পাঠ করতে ভুলে যায় বা অলসতা করে, তবে যখনই স্মরণ হবে পাঠ করে নিবে। সকাল সন্ধ্যার আমলসহ যাবতীয় দু'আ ও ঝাড়-ফুকের জন্য আমাদের কিতাবুদ দু'আ' অবশ্যই সংগ্রহে রাখবেন । 

এই কিতাবে সকল প্রকার দু'আ, যিকির-আযকার, তাসবীহ্-তাহলীল দলিল প্রমাণ সহ লেখা হয়েছে। বদন্যর প্রভৃতিতে আক্রান্ত হওয়ার আলামত : শরীআত সম্মত ঝাড় ফুক ও আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাথে কোনাে দ্বন্দ্ব নেই । শারীরিক ও মানসিক সবধরনের রোগের চিকিৎসা রয়েছে পবিত্র কুরআনে । বদন্যরে আক্রান্ত হওয়ার পর মানুষ হয়তাে বাহ্যিকভাবে শারীরিক রোগ থেকে মুক্ত থাকবে, কিন্তু তারপরও সাধারণত: বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা যেতে পারে। যেমন বিভিন্ন সময় মাথা ব্যথা অনুভব করবে । মুখমণ্ডলের রং পরিবর্তন হয়ে হলুদ হয়ে যাবে । বেশি বেশি ঘাম নির্গত হবে । বেশি বেশি পেশাব করবে। খানা-পিনার আগ্রহ কমে যাবে। শরীরের বিভিন্ন পার্শ্বে ঠাণ্ডা বা গরম বা কখনাে গরম কখনাে ঠাণ্ডা অনুভব করবে। হার্টের উঠা-নামা বা বুক ধরফড় করবে। পিঠের নিমাংশে বা দুস্কন্ধে বিভিন্ন সময় ব্যথা অনুভব করবে । অন্তরে দু:শ্চিন্তা ও সংকীর্ণতা অনুভব হবে। রাতে অনিদ্রা হবে। অস্বাভাবিক ক্রোধ বা ভয়ের কঠিন প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে। বেশি বেশি ঢেকুর বা উদগিরণ হবে। দীর্ঘ নি:শ্বাস ফেলবে । একাকীত্বকে পছন্দ করবে । অলস ও শ্রমবিমুখ হবে । দেখার প্রতি আগ্রহী হবে। স্বাস্থ্যগত অন্যান্য সমস্যা দেখা দিবে যার ডাক্তারি কোনাে কারণ নেই। রােগের দুর্বলতা ও কাঠিন্যতা অনুযায়ী এই আলামতের কিছুটা দেখা যেতে পারে। আবশ্যক হচ্ছে মুসলিম ব্যক্তি শক্তিশালী ঈমান ও সুদৃঢ় হৃদয়ের অধিকারী হবে। কোনাে ওয়াসওয়াসা যেন তার মধ্যে অনুপ্রবেশ করার সুযোগ না পায়। কোনাে উপসর্গ অনুভব করলেই আমি রােগে আক্রান্ত এরূপ ধারণা যেন মনের মধ্যে স্থান না পায়। কেননা ধারণা রােগের চিকিৎসা করা খুবই কঠিন। অবশ্য কারাে কারাে মধ্যে উক্ত উপসর্গগুলাে থেকে কিছু কিছু দেখা যেতে পারে অথচ তারা সুস্থ। আবার কখনাে কিছু উপসর্গ দেখা যায় শারীরিক অসুস্থতার কারণে, কখনাে ঈমানের দুর্বলতার কারণে। যেমন অন্তরে সংকীর্ণতা অনুভব, দুশ্চিন্তা, অলসতা ইত্যাদি। তখন আল্লাহর সাথে সম্পর্কের বিষয়কে উন্নত করার চেষ্টা করা উচিত। রােগ যদি বদনজরের কারণে হয়, তবে আল্লাহর হুকুমে নিম লিখিত যে কোনাে একটি মাধ্যমে চিকিৎসা নেয়া যেতে পারে। 

শরীআত সম্মত ঝাড়-ফুক, দোয়া ও শিঙ্গা লাগানাের মাধ্যমে আরােগ্য লাভের চেষ্টা করতে হবে ।
ধন্যবাদ সবাইকে।  ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।

Previous
Next Post »