যে সব পথে শয়তান মানুষকে আক্রমণ করে অজ্ঞতা, ক্রোধ, দুনিয়ার ভালােবাসা, দীর্ঘ আশা, লােভ, কৃপণতা, অহঙ্কার, প্রশংসা পাওয়ার বাসনা, লােক দেখানাে কাজ, আত্ম্ভরিতা, হা-হুতাশ, নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ, কুধারণা হওয়া, মুসলমানকে অবজ্ঞা করা, গুনাহসমূহকে তুচ্ছ মনে করা, আল্লাহর পাকড়াও এর ব্যাপারে নির্লিপ্ততা ও আল্লাহর দয়া থেকে নিরাশ হওয়া।
বাড়ি-ঘরকে শয়তান থেকে রক্ষা করা :
১. বাড়িতে প্রবেশ, পানাহার ও ঘুমানাের সময় আল্লাহকে স্মরণ করা। ও হাদীসে বর্ণিত মাসনুন দোয়া সমূহ নিয়মিত পাঠ করা। এ সম্পর্কীয় যাবতীয় দোয়া আমাদের কিতাবুদ দু’আ নামক কিতাবে পাবেন ।
২. বাড়িতে বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা, বিশেষ করে সুরা বাকারা পাঠ করা।
৩. ছবি, ক্রুশ ও মূর্তি হতে বাড়ি-ঘর পবিত্র রাখা।
৪. কুকুর থেকে বাড়ি-ঘর পবিত্র রাখা।
২. বাড়িতে বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা, বিশেষ করে সুরা বাকারা পাঠ করা।
৩. ছবি, ক্রুশ ও মূর্তি হতে বাড়ি-ঘর পবিত্র রাখা।
৪. কুকুর থেকে বাড়ি-ঘর পবিত্র রাখা।
৫. গান-বাজনা, বাদ্যযন্ত্র ও ডিশ থেকে বাড়ি-ঘর মুক্ত রাখা। ৬. শঙ্খ বাজানাে ও ইবলিসের বাশি থেকে বাড়ি-ঘর পবিত্র রাখা।
জাদুটোনা, বদনযর ও জিনের আসর থেকে বাঁচার উপায়ঃ
সতর্কতা চিকিৎসার চাইতে উত্তম । অতএব সতর্কতার প্রতি সচেতন থাকা জরুরি। যে সমস্ত বিষয় আমাদের জাদু ও বদ নযর থেকে বাঁচাতে পারে তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ঈমান ও তাওহীদ দ্বারা নিজেকে শক্তিশালী করা । সুদৃঢ়ভাবে এই বিশ্বাস রাখা যে, পৃথিবীর যাবতীয় কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর হাতে। সেই সাথে বেশি বেশি সৎ কাজে লিপ্ত থাকা। আল্লাহর প্রতি সুধারণা পােষণ করা ও তার ওপর ভরসা করা। কোনাে সমস্যা দেখা দিলেই যেন তা অসুখ বা বদনযর ধারণা না করে। কেননা ধারণা ও খেয়ালই একটি অসুস্থতা। কোনো লোক যদি সমাজে পরিচিত হয় যে, তার বদন্যর আছে বা সে জাদুকর তবে তার থেকে দূরে থাকা উচিত। তাদের ভয়ে নয়; বরং উপায় উপকরণ অবলম্বন করার কারণে তাদের থেকে দূরে থাকবে । সর্বদা আল্লাহর যিকির করা এবং আশ্চর্য ও আনন্দময় কিছু দেখলে তার বরকতের জন্য দু'আ করা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন
إذا رأى أحدكم من أخيه أو من نفسه أو من ماله ما يعجبه فيرك فإن العين حق
কোনো মানুষ যদি নিজের মধ্যে বা নিজ সম্পদের মধ্যে বা কোনাে মুসলিম ভাইয়ের মধ্যে আনন্দময় কিছু দেখে তবে তার জন্য যেন বরকতের দুআ করে। কেননা বদনজর সত্য । (ইবনে মাজাহ ৩৫০৮, মুসনাদে আহমাদ ১৫৭০০) বরকতের দু'আ করার জন্য বলবে, u a। ৬ বারাকাল্লাহু লাকা। জাদু ইত্যাদি থেকে বাঁচার শক্তিশালী একটি মাধ্যম হচ্ছে, প্রতিদিন সকালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মদীনার (আজওয়া) নামক সাতটি খেজুর খাওয়া । হাদীসে বর্ণিত হয়েছে
قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من نصبح كل يوم سبع تمرات عجوة لم
يضره في ذلك اليوم سم ولا سحر
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি আজওয়া (মদীনার বিশেষ এক প্রকারের খেজুর) খাবে সে ব্যক্তিকে ঐ দিন কোনাে বিষ অথবা জাদু ক্ষতি করতে পারবে না। (বুখারী
৫৪৪৫, ২০৬৬)
আল্লাহ তাআলার স্মরণাপন্ন হওয়া, তার ওপর ভরসা করা, তার প্রতি সুধারণা পােষণ করা এবং জাদু ও বদনযর থেকে তার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যার যিকির সমূহ যথারীতি পাঠ করা। আল্লাহর হুকুমে এই যিকিরগুলাের বিশেষ প্রভাব আছে। আর তার কারণ দুটি; ১.
এগুলাের মধ্যে যা বলা হযেছে তা সত্য ও সঠিক একথার প্রতি ঈমান এবং আল্লাহর হুকুমে এগুলাে উপকারী। ২. উহা নিজের মুখে উচ্চারণ করে নিজের কানে শােনা এবং অন্তর উপস্থিত রেখে পাঠ করা। কেননা উহা দুআ। আর উদাস অন্তরের দুআ কবুল করা হয় না। যেমনটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে ছহীহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। শিরক মিশ্রিত আকীদা (বিশ্বাস) থেকে মুক্ত থাকা। শুধুমাত্র আল্লাহকে ভয় করা, অন্য কাউকে ভয় না করা। ধারণা ও অনুমানভিত্তিক কথা-বার্তা থেকে বিরত থাকা। বেশি বেশি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করা । অন্তর পরিষ্কার রাখা, নিয়ত সঠিক করা ও মুসলিম ভাই-বােনদের প্রতি হিংসা করা থেকে বিরত থাকা।
সকল সালাত যথাসময়ে জামাতের সাথে যথাপােযুক্তভাবে আদায় করার প্রতি যত্নবান হওয়া। সালাত বর্জন ও সালাতের ব্যাপারে অবহেলা করা শয়তানের প্রভাব-প্রতিপত্তির কারণ। রাতের বেলায় সালাত মানে তাহাজ্জুদের সালাত বাড়িতে পড়া। অধিক পরিমাণে আল্লাহর জিকির করা ও সকাল সন্ধ্যার পঠনীয় দুআগুলাে পাঠ করা। (এ সম্পর্কে আমাদের কিতাবুদ দু’আ দেখতে পারেন) সন্তানের জন্য আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা।
তাওবাহ করা ও বান্দা যে সকল বিপদ-আপদে পতিত হয় সেসব বিষয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করা। আর তা (বিপদ) তার গুনাহের কারণেই ঘটে থাকে। অতঃপর সে যখন তাওবাহ করে তখন তা (বিপদ) তার নিকট হতে দূর
করা হয় । পবিত্রতা অর্জন করা, নিশ্চয়ই শয়তান পবিত্রতা ও পবিত্রতা অর্জনকারী থেকে ভয়ে দূরে চলে যায়। বাড়ি ঘরকে ছবি, মূর্তি, কুকুর, বাদ্যযন্ত্র ও বিপর্যয়ের সরঞ্জামাদি যেমন ডিশ ইত্যাদি থেকে পবিত্র রাখা । দুআ করা ও আল্লাহর নিকট অনুনয় বিনয় করা। বাড়ি ও অন্যান্য স্থানে অধিক পরিমাণে কুরআন তিলাওয়াত করা, বিশেষ করে সূরা বাকারা। আল্লাহর বিষয়ে তুমি যত্নবান হও আল্লাহ তােমার যত্ন নিবেন ।
ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। আজ এ পর্যন্তই। আল্লাহ হাফেজ।