জাদু বা বদনযর লাগা ব্যক্তির জন্য উপদেশাবলী কি কি?


জাদু বা বদনযর লাগা ব্যক্তির জন্য উপদেশাবলী কি কি?

বদনযর লাগা ব্যক্তির জন্য উপদেশাবলী :
শুধুমাত্র এক আল্লাহর তাওহীদে (একত্ববাদ) বিশ্বাসী হওয়া। আল্লাহকে ভয় করা ও তাঁর সীমা রক্ষা করা। শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট সঠিকভাবে আশ্রয় চাওয়া।

বেশি করে কুরআন পড়া। বেশি করে আল্লাহর যিকির করা ও উহা দ্বারা রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করা। হিংসুকের হিংসা ধৈর্য ধরা । আল্লাহর ওপর দৃঢ়ভাবে নির্ভরশীল হওয়া । দৃঢ় ভালোবাসার মাধ্যমে আল্লাহর দিকে মনােনিবেশ করা। বেশি বেশি গুনাহ থেকে ক্ষমা চাওয়া। সদকা করা ও হিংসুকের প্রতি দয়া করা।
কয়েকটি সতর্কতা :

১. বদনযরকারীর সাথে সংশ্লিষ্ট কুসংস্কারকে বিশ্বাস করা জায়েয নয় । যেমন তার প্রস্রাব পান করা, তার স্পর্শকৃত বস্তু পাওয়া গেলে তা দ্বারা কোনাে উপকার পাওয়া যাবে এমন বিশ্বাস করাও যাবে না। 

২. বদন্যর লাগবে এই আশঙ্কায় তাবীজ লটকানাে বা চামড়া বা রিং বা তাবীজের মালা পরিধান করা জায়েয নেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন
من تعلق شيئا وكل إليه
“যে ব্যক্তি কোনো কিছু লটকাবেন, তাকে সেই বস্তুর প্রতি সোপর্দ করা হবে। (তিরমিযী ২০৭২, মুনাদে আহমাদ ১৮৭৮১

৩. গাড়ীর মধ্যে মাশাআল্লাহ তাবারাকাল্লাহ' লিখে, তলােয়ার, চাকু, চোখ আঁকিয়ে লটকিয়ে দেয়া, কুরআন রাখা, অথবা বাড়িতে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত লিখে লটকিয়ে রাখা জায়েয নয়। কেননা এগুলাে দ্বারা বদন্যর থেকে বাঁচা যাবে না। বরং এগুলাে নিষিদ্ধ তাবীজের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতে পারে । 

৪. রােগী দৃঢ় বিশ্বাস রাখবে যে তার দুআ কবুল হবে। আরােগ্য হতে দেরি হচ্ছে কেন এ কথা বলবে না। যদি বলা হয় যে আরােগ্যের জন্য সারা জীবন ঔষধ খেতে হবে তবে ভীত হয় না। কিন্তু যদি দীর্ঘ সময় ঝাড়-ফুক করা হয় তবে অস্থির হয়ে যায়। অথচ ঝাড়-ফুকের জন্য যে আয়াত পাঠ করা হয় তার প্রত্যেকটা অক্ষরে নেকি পাওয়া যাবে। আর একটি নেকিকে দশগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। রােগীর ওপর আবশ্যক হচ্ছে বেশি বেশি দুআ, ইস্তেগফার করা এবং বেশি বেশি দান-সাদকা করা। কেননা এগুলাের মাধ্যমে আরােগ্য আশা করা যায়। 

৫, দলবদ্ধ হয়ে ঝাড়-ফুকের দু'আ পাঠ করা সুন্নাতের খেলাফ। এর প্রভাবও দুর্বল। অনুরূপভাবে শুধুমাত্র টেপরেকর্ডারের মাধ্যমে শােনাও ঠিক । কেননা এতে নিয়ত উপস্থিত থাকে না। অথচ ঝাড়-ফুককারীর নিয়ত থাকা অন্যতম শর্ত। যদিও টেপরেকর্ডারের কেরাত শােনাতে কল্যাণ আছে। আরােগ্য লাভ করা পর্যন্ত ঝাড়-ফুকের দু'আ বারবার পাঠ করা সুন্নাত। কিন্তু ক্লান্ত হয়ে গেলে ঝড়-ফুক কমিয়ে দিবে যাতে করে বিতৃষ্ণাভাব সৃষ্টি না হয়। বিনা দলীলে আয়াত ও দু’আ পাঠ করার ক্ষেত্রে সংখ্যা নির্দিষ্ট করা ঠিক নয় ।

৬. কিছু কিছু আলামত আছে যা দ্বারা প্রমাণ পাওয়া যাবে যে, ঝাড় ফুককারী জাদু বা শিরকী কিছু ব্যবহার করছে; কুরআন দ্বারা ঝাড়-ফুক করছে না। উপরে ধর্মীয় কিছু পরিচয় থাকলেও ধোকায় পড়া যাবে না। শুরুতে কুরআন থেকে হয়তাে কিছু পাঠ করবে, অল্পক্ষণ পরেই অন্যকিছু পড়া শুরু করবে । আবার অনেকে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ঘনঘন মসজিদে যাবে। আপনার সামনে ঠোট নাড়িয়ে যিকির পাঠ করবে । সাবধান! এদের আক্বীদা ও মূল পরিচয় না জেনে যেন ধােকায় না পড়েন।
ধন্যবাদ সবাইকে।

Previous
Next Post »