এই লেকচারটি ডাউনলোড করতে নিচের দিকে একটা ডাউনলোড বাটন পাবেন। ওইখানে ক্লিক করলেই সাথে সাথে ডাউনলোড শুরু হবে।
নিচে কিছু হাদিস লিখা হলো ভালো লাগলে পড়বেন।
📖📖📖📖📖📖📒📒📒📒📒📒📘📘📘📘📘📜📜📜📜📜
রবের পরিচয় ও মানুষের অঙ্গীকার
আমরা সকলেই বলি যে, আমরা আল্লাহকে বিশ্বাস করি। এর মানে কি? তাই আমরা প্রথমেই আলােচনা করবাে আল্লাহ বিশ্বাস করার অর্থ নিয়ে । কুরআনুল কারীমের সূরা বাকারার ৮ নাম্বার আয়াতে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন,
ومن الناس من يقول آمنا بالله وباليوم الآخر وماهم بمؤمنين. অর্থ: “মানুষের মধ্যে এমন কিছু লােক আছে যারা বলে যে, আমরা আল্লাহর উপর ঈমান এনেছি, (আমরা তাকে বিশ্বাস করি) কিয়ামতকে বিশ্বাস করি; কিন্তু তারা মুমিন নয়।” (সূরা বাকারা, আয়াত ০৮) এই আয়াতে মহান আল্লাহ তাআলা নিজেদেরকে ঈমানদ্বার দাবীকারী কিছু লােকের ব্যাপারে বলছেন যে ওরা মুমিন নয়, ওরা মুনাফিক। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তাআলা মুনাফিকদের আলােচনা শুরুই করেছেন মূলত: এই আয়াত দিয়ে। এর আগে কুরআনুল কারীমের সূরা বাকারার প্রথম পাঁচটি আয়াত হচ্ছে মুমিন সম্পর্কে। তার পরের ২টি আয়াত কাফিরদের সম্পর্কে। তার পরের ১৩ টি আয়াত নাযিল হয়েছে। মুনাফিকদের সম্পর্কে। তাহলে বুঝা যাচ্ছে যে, সবচেয়ে ভয়াবহ হচ্ছে মুনাফিক। কাফিরের চেয়েও ভয়াবহ হচ্ছে মুনাফিক। কুরআনুল কারীমে কাফিরদের নামে একটি সূরা নাযিল হয়েছে কাফিরুন যা মাত্র ৬ আয়াতের। একইভাবে মুনাফিকদের নামে একটি সূরা নাযিল হয়েছে মুনাফিকুন যা প্রায় দেড় পৃষ্ঠা। যার আয়াত সংখ্যা ১১। সূতরাং বুঝা গেলাে যে মুনাফিকরা হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ। আমাদের বুঝতে হবে
যে, আমরা আবার এই মুনাফিকদের দলে পরে যাই কি না? এজন্যই আমরা আলােচনা টি শুরু করবাে আল্লাহকে বিশ্বাস করা না করা নিয়ে। প্রথমেই আসুন জেনে নেয়া যাক আল্লাহকে বিশ্বাস করার অর্থ কি? আল্লাহকে বিশ্বাস করা সম্পর্কে আমরা কুরআন এবং হাদীস থেকে যতটুকু ধারণা পাই তাতে দুটি বিষয় আসে ।
১) আল্লাহকে বিশ্বাস করার অর্থ হলাে আল্লাহর উযুদ বা আল্লাহ আছেন এবং তার অস্পিত্বকে বিশ্বাস করা। সংক্ষেপে যাকে বলে তাওহীদ।
২)
আল্লাহর ওয়াহদানিয়াত বা এককত্বে বিশ্বাস করা।
আল্লাহর এই এককত্ব তিনভাবে পাওয়া যায়। ১. উলুহিয়্যাত। ইবাদতের ক্ষেত্রে তাওহীদ বা আল্লাহর এককত্ত্ব বজায় রাখা। ২. রুবুবিয়্যাত। রুবুবিয়্যাতের ক্ষেত্রে একত্ববাদকে বজায় রাখা। ৩. আল আসমা ও সিফাত আসমাউস সিফাতের ক্ষেত্রে একত্ববাদকে বজায় রাখা।
আমরা আজকে যেই বিষয়টি নিয়ে আলােচনা করছি তা হচ্ছে উযুদে বারি তাআলা বা আল্লাহর অস্তিত্ব। মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কালামে মাজীদে সুস্পষ্টভাবে ঘােষণা করে দিয়েছেন,
وما خلقت الجن والإنس إلا ليعبدون.
অর্থ: “আমি জীন এবং মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদত করার জন্য। (সূরা যারিয়াত, আয়াত ৫৬)
এই আয়াতে আল্লাহ বলছেন যে, তিনি মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদত, আনুগত্য, দাসত্য করার জন্য। এখন আমরা যারা মহান আল্লাহর দাসত্ব করবাে, তাকে তাে আগে চিনতে হবে। না চিনে কিভাবে আল্লাহ তাআলার ইবাদত করবাে? কিভাবে তার গােলামী ও দাসত্ব করবাে? এজন্য আল্লাহর পরিচয় লাভ করা এটা ঈমান আনার জন্য প্রথম শর্ত। কে সে আমরা যার ইবাদত করবাে?
আল্লাহ রাব্বুল আলামীনও এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। মানব জাতিকে সৃষ্টি করে পৃথিবীতে পাঠাবার আগেই রূহ গুলােকে একত্রিত করে এ উপলক্ষ্যে বিশাল এক সমাবেশ করলেন। যেখানে হযরত আদম আ. থেকে শুরু করে কিয়ামত পর্যন্প্য যে মানুষেরা পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করবে সকলকেই সেই সমাবেশে অংশ গ্রহণ করতে বাধ্য করেছেন। কুরআনুল কারীমে সূরা আরাফের ১৭২-১৭৩ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ ইরশাদ করেন:
১৭
وإذ أخذ ربك من بني آدم من ظهورهم ذريتهم وأشهدهم على أنفسهم ألست بربكم قالوا بلى شهدنا أن تقولوا يوم القيامة إنا كنا عن هذا غافلين
অর্থ: "আর স্মরণ করাে সেই সময়ের কথা, যখন তােমার রব হযরত আদম আ. এর পিঠের থেকে তার সঞ্চানদের রুহ গুলোকে বের করলেন। আবার সেই সন্তানদের পিঠের থেকে তাদের সন্তানদের এইভাবে সকলের রুহ গুলােকে বের করলেন। এরপর তাদের উপরে তাদের নিজেদেরকে সাক্ষ্য বানালেন। এরপর তিনি তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন, پرب ad আমি কি তােমাদের রব নই? তখন সকলে সমস্বরে ঘােষণা করলাে, অবশ্যই অবশ্যই আপনি আমাদের রব এবং আমরা এর সাক্ষ্য দিচ্ছি । (মহান আল্লাহ বললেন) আমি এটা এজন্য করেছিলাম যাতে করে তােমরা কিয়ামতের দিন একথা বলতে না পারাে যে, (আপনি যে আমাদের রব) আমরা এসম্পর্কে জানতাম না, অজ্ঞ ছিলাম।” (সূরা আরাফ :১৭২) এই আয়াতে ৯১ দ্বারা হযরত আদম আ. এর পিঠের থেকে এবং তাদের পিঠের থেকে এমন করে ধারাবাহিকভাবে যত মানুষ জন্ম নিবে
সকলকেই উদ্দেশ্য করা হয়েছে। তারপর আল্লাহ তাআলা সেই মহা সমাবেশে তাদের সামনে নিজের পরিচয় দিলেন, তাদেরকে তাদের রব আল্লাহ সম্পর্কে ধারণা দিলেন এরপর তাদেরকে পরীক্ষা নিলেন এবং তাদের নিজেদের ব্যাপারে নিজেদেরকে সাক্ষী বানালেন। এজন্য তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, আমি কি তােমাদের রব নই? তখন তারা সকলে উত্তর দিয়েছিলাে, সব লােকেরা বললাে অবশ্যই অবশ্যই আপনি আমাদের রব এবং আমরা এর সাক্ষ্য দিচ্ছি আরবীতে কোন কিছু স্বীকার করা, সাক্ষ্য দেয়া দুটি শব্দ ব্যবহৃত হয়। একটি হচ্ছে আর অপরটি হচ্ছে । এই দুটির মাঝে পার্থক্য হচ্ছে। যখন কোন বিষয়কে প্রমাণ সহকারে ব্যক্ত করা হয় তখন বলা হয় । তার মানে অবশ্যই আপনি আমাদের রব। কেনই বা আপনি আমাদের রব হবেন না। ১ আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি । আল্লাহ তাআলা
বলছেন যে এই সাক্ষ্য আমি কেন নিলাম? أن تقولوا يوم القيامة إنا گنا عن هذا غافلين.
অর্থ: “যাতে করে কিয়ামতের দিন এটা বলতে না পারাে যে আমরা তাে এ সম্পর্কে গাফেল ও অজ্ঞ ছিলাম। (আপনি যে আমাদের রব তা আমরা জানতাম না ।)” (সূরা আরাফ, আয়াত ১৭২)
অথবা যাতে তোমরা একথা বলতে না পারা, أو تقولوا إنما أشرك أباؤنا من قبل وگذا ئرية من بعدهم أفثهلنا
بما فعل المبطلون
অর্থ: “আমাদের পিতৃপুরুষরা আগে শিরক করেছে। আমরা তাে তাদের পরবর্তী তাদের সম্প্ঢান ছিলাম তাদের অনুসরণ করেছি মাত্র। আপনি কি আমাদেরকে আমাদের পূর্ববর্তী বাপ-দাদারা আগে যেই শিরক করেছে। সেই পূর্ববর্তী বাতিলদের অন্যায়ের কারণে শাস্প্চি দিবেন? (সূরা আরাফ, আয়াত ১৭৩) এই অভিযােগ যাতে না করতে পারে সেজন্য তােমাদের নিজেদেরকেই নিজেদের ব্যাপারে সাক্ষী বানালাম। এই আয়াতের মাধ্যমে আরাে একটি বিষয় পরিস্কার হয়, তা হলাে পূর্ববর্তী লােকেরা দলীল নয়। দলীল হবে কুরআন এবং সুন্নাহ। যে কোন ব্যাপারে মতানৈত্য দেখা দিলে সে বিষয়ে মহান আল্লাহ এবং তার রাসূলের দিকে যেতে হবে । কুরআন এবং হাদীসের সমাধান মানতে হবে। যেমন অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে:
فإن تنازعم في شيء فروة إلى ال له والرسول إن كلثم تؤمنون بالله واليوم الآخر ذلك خير وأحسن تأويلا অর্থঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর অনুসরণ কর এবং তোমাদের মধ্যকার আল্লাহর রাসূলের অনুসরণ করাে এবং উলিল আমরদের । অতঃপর যদি কোন বিষয়ে তােমাদের মাঝে বিরােধ দেখা দেয় তাহলে তার ফায়সালা ও সমাধানের জন্য তােমরা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর দিকে প্রত্যাবর্তন কর। যদি তােমরা আল্লাহ এবং শেষ দিবসে বিশ্বাসী হয়ে থাকো।” (সূরা নিসা, আয়াত ৫৯) একইভাবে মহানবী সা. বিদায় হজ্জের ভাষণেও কয়েক স্থানে বার বার বলেছেন, وحدثني عن مالك أنه بلغه أن رسول الله صلى ال له عليه وسلم قال تركت فيكم أمرين لن تضلوا ما تمسكتم بهما كتاب الله وسنة
نبيه موطأ مالك لمالك بن أنس
যাক, আজ এই পর্যন্তই।
লেকচারটি ডাউনলোড করে নিন।